রাব্বি আহমেদ, বরগুনা প্রতিনিধিঃ আলোচনাও সমালোচনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দাদীর করা মামলায় জামিন পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীও স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে হস্তক্ষেপ কামনাকারি শিশু আলিফ ও দুগ্ধপোষ্য শিশু গালিফের মা অনিতা জামান।

সোমবার(১৯জুলাই)বরগুনা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ মাহবুবুল আলম এই দুই শিশুর মা অনিতা জামানকে শর্ত সাপেক্ষে জামিনে মুক্তি দিয়েছেন। আগামী এক মাসের মধ্যে পারিবারিক বিষয়ে আপোষ মিমাংসার জন্য নির্দেশ দিয়েছে আদালত।


গতকাল রোববার অনিতা জামানের আইনজীবী মেঃ নজরুল ইসলাম তার জামিনের জন্য আদালতে আবেদন করলে আজ সোমবার জামিন শুনানির দিন ধার্য করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে,জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে শাশুড়ি আলেয়া বেগম দুই ছেলে,অনিতা জামান সহ দুই পুত্রবধূ এবং চাচাতো দেবর দুলালের বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।মামলার প্রধান আসামি অনিতা জামান গত ১৫জুলাই আদালতে হাজির হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে অনিতার স্বামী জুয়েল পলাতক থাকায় তার দুই সন্তান আলিফ এবং গালিফ অসহায় হয়ে পরে।তাছাড়া ছোট ভাই গালিফ দুগ্ধপোষ্য।এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে আলিফ ছোটভাইকে নিয়ে শনিবার সকালে বরগুনা টাউন হল চত্বরের অগ্নিঝরা একাত্তরের পাদদেশে এবং পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করে।

শনিবার(১৭জুলাই)সকালে বরগুনা শহরের টাউনহল এলাকার অগ্নিঝরা একাত্তরের পাদদেশে অসহায় দুই শিশুরএ অবস্থান কর্মসূচি দেখতে ভিড় জমান উৎসুক জনতা।এ সময় সাংবাদিকদের আলিফ জানান,তার মা অনিতা জামানকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে।মামলা প্রত্যাহার করে অনতিবিলম্বে মাকে মুক্তি না দিলে তারা ঘরে ফিরে যাবে না।

ভুক্তভোগী শিশু আলিফের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাবার চাকুরির সুবাদে তারা গাজিপুর জেলায় বসবাস করে আসছিলো।সে সেখানকার একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে একটি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে মেধাবী শিক্ষার্থী আলিফ ইংল্যান্ডে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছে।তার ভিসাও প্রস্তুত। করোনার কারণে তার ইংল্যান্ড যাওয়া বিলম্বিত হয়েছে।অথচ এমন একটি সময়ে তার দাদীর দায়ের করা মামলায় কারাগারে রয়েছে তাদের মা আনিতা জামান।শিশু আলিফ আরও জানায়,তার বয়স এখন১২বছর। অথচ মামলায় তার বয়স১৮বছর দেখিয়ে তাকেও আসামী করা হয়েছে!বিজ্ঞ আদালত থেকে তার বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়েছে।

অন্যদিকে উভয়পক্ষের আইনজীবীর সাথে কথা বলে জানা গেছে,করোনাকালীন সময়ে গত দুই থেকে তিনমাস ধরে শিশু আলিফও গালিফকে নিয়ে মা আনিতা জামান বরগুনায় তাদের গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার আয়লাপাতাকাটা ইউনিয়নের খেজুর তলা গ্রামে বসবাস করছে।জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পারিবারিকভাবে আলিফও গালিফের বাবা মনিরুজ্জামান জুয়েলও তার মা-বোনদের মাঝে কলহ চলছে। মামলায় আলিফের বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে বৃদ্ধ দাদীকে মারধরের অভিযোগ করা হয়েছে।

অন্যদিকে বাবা মো.মনিরুজ্জামান জুয়েল গাজিপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।মামলায় ঘটনার যে সময় দেখানো হয়েছে ঠিক সে সময়ে আলিফের বাবা মো. মনিরুজ্জামান জুয়েল তার কর্মস্থলে ছিলেন।সেখানে ডিজিটাল হাজিরায় তার অফিস কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষরিত সিট রয়েছে।অথচ মিথ্যা তথ্য দিয়ে সেই মামলায় তার বাবা মনিরুজ্জামান জুয়েলকেও আসামী করা হয়েছে।তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীও স্থানীয় সংসদ সদস্যর মাধ্যমেএ মিথ্যে মামলা থেকে মায়ের মুক্তির দাবি জানিয়েছিলো অসহায় দুই শিশু আলিফও গালিফ।